গাধা আর কুকুরের বন্ধুত্ব
একদা, এক গ্রামে এক কৃষকের বাড়িতে একটি গাধা ও একটি কুকুর একসাথে থাকত।
গাধাটি ছিল কৃষকের বোঝা বইবার কাজের সঙ্গী, আর কুকুরটি ছিল বাড়ির রক্ষক।
যদিও তারা একসাথে থাকত, কিন্তু তাদের মধ্যে বন্ধুত্বের অভাব ছিল।
একদিনের ঘটনা
একদিন কৃষক মাঠে কাজ করতে গিয়েছিলেন।
দুপুরে গরমের কারণে তিনি ফিরে এসে খাবার খেয়ে একটু বিশ্রাম নিচ্ছিলেন।
গাধা তখন গোয়ালে বিশ্রাম নিচ্ছিল, আর কুকুরটি দরজার পাশে শুয়ে ছিল।
কুকুরের অলসতা
ঠিক তখনই এক চোর চুপিসারে কৃষকের বাড়িতে ঢোকার চেষ্টা করল।
কুকুরটি অলস ছিল, তাই সে কিছুই করল না।
গাধাটি এটা দেখে চিন্তিত হয়ে পড়ল এবং কুকুরকে বলল,
"বন্ধু! তুমি কেন চোরকে দেখে চিৎকার করছো না?"
কুকুর হাই তুলে বলল,
"আমি কেন কষ্ট করব? কৃষক আমাকে খাবার দেয়নি, তাই আমি কিছু বলব না।"
গাধার বুদ্ধি
গাধা বুঝতে পারল, এখন কিছু করা দরকার। তাই সে জোরে চিৎকার করে ডাকতে লাগল এবং লাফিয়ে লাথি মারতে শুরু করল।
কৃষক ঘুম থেকে উঠে চোরকে দেখতে পাল না , চোর দৌড়ে আগে পালিয়ে গেয়েছিল। ,
কিন্তু সে দেখল গাধাটি অকারণে চিৎকার করছে। রেগে গিয়ে কৃষক গাধাকে বকাঝকা করল।
পরিণতি
পরদিন, চোর আবার এলো।
এবারও কুকুরটি চুপ করে থাকল, কিন্তু গাধাটি কিছু না বলে ছিল।
চোর সহজেই কৃষকের অনেক জিনিস চুরি করে নিয়ে গেল।
কৃষক তখন বুঝতে পারল, গাধাটিই ছিল সত্যিকারের বুদ্ধিমান এবং সৎ বন্ধু।
গল্প শেষ হলো।
গল্পের শিক্ষণীয় বার্তা:
-
যোগ্য কাজের স্বীকৃতি দেওয়া উচিত – যারা সত্যিই দায়িত্ব পালন করে, তাদের প্রশংসা করা উচিত, অন্যথায় তারা ভবিষ্যতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলতে পারে।
-
ভুল সিদ্ধান্ত নেওয়া ক্ষতিকর হতে পারে – সত্যিকারের দায়িত্ববান কেউ যদি অবিচারের শিকার হয়, তাহলে ভবিষ্যতে সে আর উদ্যোগ দেখাবে না।
-
অসতর্কতা বিপদ ডেকে আনতে পারে – কৃষক যদি প্রথমেই গাধার ভূমিকা বোঝত, তাহলে চুরির ঘটনা এড়ানো যেত।
-
কেবল বাহ্যিক আচরণ দেখে কাউকে বিচার করা উচিত নয় – বাস্তব পরিস্থিতি যাচাই না করে কারো ওপর রাগ দেখানো ভুল হতে পারে।
এই গল্প আমাদের শেখায় যে, একজন কর্মঠ ও সৎ ব্যক্তি বা প্রাণীকে ভুল বোঝা হলে তা ক্ষতির কারণ হতে পারে। 😊
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন