সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

ভৌতিক সত্য ঘটনা গল্পের নামঃ নরখাদক ছায়া পর্বঃ ১

 

ভৌতিক সত্য ঘটনা

গল্পের নামঃ নরখাদক ছায়া

পর্বঃ ১

অনেক বছর আগের কথা। বীরপুর নামে একটি অখ্যাত, গহীন জঙ্গলের পাশে গড়ে ওঠা ছোট্ট এক গ্রামে ঘটেছিল এই ঘটনাটি। তখনও আলো-বিদ্যুৎ পুরোপুরি পৌঁছায়নি সেখানে। সন্ধ্যার পরেই গ্রাম যেন মৃত্যুপুরী হয়ে যেত।
এই গ্রামে বাস করত এক হতদরিদ্র দম্পতি—নন্দিনী ও তার স্বামী রঘু।
তাদের বসবাস ছিল লোকালয় থেকে অনেকটা দূরে, প্রায় জঙ্গলের গায়ে একটি কুড়েঘরে।
দুই সন্তান, অসুস্থ স্বামী ও নিরুপায় জীবনের ভারে জর্জরিত ছিল নন্দিনী।

রঘু বহুদিন ধরেই অসুস্থ, শরীরের শক্তি একেবারে নিঃশেষ। শয্যাশায়ী হয়ে কেবল মৃত্যুর প্রতীক্ষায় ছিল।

ঘটনাটি ঘটেছিল শ্রাবণের অমাবস্যার রাতে।
সেই রাত—আজও যারা বেঁচে আছেন, তাদের মুখে মুখে ফেরে।

দিনভর মেঘ জমে ছিল। বিকেলের দিকে শুরু হয় ঝড়-বৃষ্টি, তারপর রাত নামতেই শুরু হয় এমন এক ভয়ানক অন্ধকার—যেন অন্ধকারও ভয় পেয়ে গিয়েছে নিজের গভীরতা দেখে।

রাত তখন প্রায় ১১টা। নন্দিনী ঘরের কোণে স্বামীর পাশে বসে ছিল। হঠাৎ চারদিক কেঁপে উঠল কাকের অদ্ভুত চিৎকারে।
ঝড়, বৃষ্টি, কাকের ডাক—সব মিলিয়ে নন্দিনীর হৃদয়ে যেন দাঁতের কামড় বসালো ভয়।
স্বামীর কপালে হাত রাখতেই সে আঁতকে উঠল—শীতল, নিথর দেহটা বলল রঘু আর নেই।

কাঁপতে কাঁপতে সে পিছিয়ে আসে। চারপাশে তখন ঝড় থেমে গিয়েছে, কিন্তু গাছের পাতাগুলোর মধ্যে এখনো যেন কিছু একটা লুকিয়ে আছে—তা টের পাওয়া যাচ্ছিল।

ঠিক তখনই তাদের পোষা কুকুর 'কালো' হঠাৎ করেই অদ্ভুত গলায় কাঁদতে শুরু করে।
তা যেন মানুষের কণ্ঠে আর্তনাদ।

নন্দিনী দুই সন্তানকে বুকের মধ্যে চেপে ধরে বসে থাকে।
তখনই—ঘরের দরজায় খটখট আওয়াজ।

"নন্দিনী... দরজা খোল মা... আমি বুড়ি মাসি..."

একটা ফ্যাসফ্যাসে গলা... চেনা কিন্তু অস্বাভাবিকভাবে খটখটে... যেন গলা থেকে রক্ত উঠে আসছে।
নন্দিনী ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে দরজার পাশে গিয়ে কান পাতে।

আবার সেই ডাক—

"দরজা খোল, মা... আমি এসেছি তোমাদের দেখতে..."

অবশেষে সাহস সঞ্চয় করে সে দরজাটা আধখানা খুলে দেখে—এক বৃদ্ধা নারী দাঁড়িয়ে, তার পরিচিত দূরসম্পর্কের মাসি।

কিন্তু অদ্ভুত বিষয়—বাইরে এতক্ষণ ধরে ঝড়-বৃষ্টি চলছিল, অথচ বৃদ্ধার গায়ে একফোঁটা পানিও নেই। চুল সাদা, চোখ দুটো লালচে—আর মুখে বিশাল পানখাওয়া দাঁত নিয়ে হি হি করে হাসছে।

নন্দিনী কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই বৃদ্ধা ঘরে ঢুকে পড়ে। সে বলে, "তোর স্বামী এখন শান্তি পেয়েছে... এখন শুধু ভোরের অপেক্ষা..."

নন্দিনী দিশেহারা হয়ে সন্তানদের পাশের ঘরে শোয়াতে যায়।

ঠিক তখনই—ঘরের ভেতর থেকে আসে অস্বাভাবিক শব্দ।

"কটকট... গড়গড়... চিবোনোর মতন..."

নন্দিনী বেড়ার ফাঁক দিয়ে উঁকি মারে—
যা দেখে সে চিৎকার করে উঠতে গিয়েও থেমে যায়, যেন গলায় কেউ হাত চেপে ধরেছে।

ঘরের মাঝখানে রঘুর নিথর দেহ নেই।
তার জায়গায় বৃদ্ধা হাঁটু গেড়ে বসে আছে—আর চিবোচ্ছে কিছু একটা... তার মুখ রক্তে ভেসে যাচ্ছে...

নন্দিনী ঠিক কী দেখেছিল সেই রাতে?
কে ছিল সেই বৃদ্ধা?

নাকি সে আসলেই মানুষ ছিল না...?
জানতে হলে পাশে থাকুন...

🔮 পরবর্তী পর্ব পাঠকের লাইক ও মন্তব্যের উপর নির্ভর করবে।
গল্পটি ভালো লাগলে লাইক ও কমেন্ট করুন। আপনাদের প্রতিক্রিয়া আমাদের পরবর্তী অধ্যায় লেখার প্রেরণা জোগায়।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

🦁 সিংহ ও ইঁদুর 🐭 ঠাকুরমার ঝুলি থেকে নীতিশিক্ষামূলক গল্প

  🦁 সিংহ ও ইঁদুর 🐭 ঠাকুরমার ঝুলি থেকে নীতিশিক্ষামূলক গল্প   একদা এক গভীর জঙ্গলে এক বিশাল সিংহ বাস করত। সে ছিল বনের রাজা, সমস্ত প্রাণী তার ভয়ে কাঁপত। একদিন দুপুরবেলা রাজা সিংহ খেয়ে দেয়ে এক গাছের ছায়ায় ঘুমিয়ে পড়ল। এমন সময়, এক ছোট্ট ইঁদুর তার গর্ত থেকে বেরিয়ে এদিক-ওদিক দৌড়াদৌড়ি করছিল। খেলার ছলেই সে ভুলবশত সিংহের গায়ের উপর চড়ে গেল। এতে সিংহের ঘুম ভেঙে গেল। 😡 ⚡ গর্জন করে সে ইঁদুরটিকে ধরে ফেলল এবং রাগান্বিত স্বরে বলল, 👉 "দুষ্ট ইঁদুর! তুমি এত সাহসী হলে যে আমায় বিরক্ত করছ? এখন আমি তোমাকে খেয়ে ফেলব!" ইঁদুরটি ভয়ে কাঁপতে লাগল এবং হাতজোড় করে বলল, 🙏 "মহারাজ, দয়া করুন! আমি খুবই ছোট্ট আর অসহায়। দয়া করে আমাকে মুক্ত করুন। আমি একদিন আপনার উপকারে আসব!" সিংহ হেসে বলল, 😆 "তুমি এত ছোট একটা প্রাণী! তুমি আবার কীভাবে আমার উপকার করবে?" তবুও, সিংহ দয়ালু হয়ে ইঁদুরটিকে মুক্ত করে দিল । ইঁদুর আনন্দে লাফিয়ে গিয়ে বলল, 🐭 "আপনার এই দয়ার প্রতিদান আমি একদিন দেব, মহারাজ!" ⏳ কিছুদিন পর... সিংহ একদিন বনের মধ্যে শিকারের সন্ধানে ঘুরছিল। হঠাৎ সে এক শিকার...

"বাঘ এসেছিল!|শিশুদের জন্য একটি রহস্যময় বাংলা গল্পIThere Comes the Tiger...

✋ হাতের রেখা বিচার A থেকে Z (Palmistry in Bengali)

    ✋ হাতের রেখা বিচার A থেকে Z (Palmistry in Bengali) 🔠 A থেকে Z বিষয়ভিত্তিক তালিকা: অক্ষর বিষয় বাংলা ব্যাখ্যা A Arjuna Line বিজয়ের রেখা, সাফল্যের প্রতীক B Bracelet Lines কব্জির দাগ, আয়ু ও ভাগ্যের সংকেত C Cross on Palm হাতের ক্রস চিহ্ন – বাধা বা আশীর্বাদ D Destiny Line (ভাগ্যরেখা) কর্মজীবন ও ভাগ্যের দিক নির্ধারণ E Education Line শিক্ষাগত সাফল্যের রেখা F Fate Line কর্মজীবনের উত্থানপতনের রেখা G Girdle of Venus অতিরিক্ত আবেগ বা শিল্পপ্রতিভার চিহ্ন H Heart Line (হৃদয়রেখা) ভালোবাসা ও সম্পর্কের সূচক I Island Sign জীবনে বাধা বা কষ্টের প্রতীক J Jupiter Mount নেতৃত্ব, সম্মান ও উচ্চাকাঙ্ক্ষা K Ketu Line আধ্যাত্মিকতা ও বিচ্ছিন্নতার রেখা L Life Line (জীবনরেখা) শরীর, স্বাস্থ্য ও আয়ুর ইঙ্গিত M Mystic Cross আধ্যাত্মিক প্রতিভার চিহ্ন N Nail Shape স্বাস্থ্য ও ব্যক্তিত্ব প্রকাশ করে O Om Symbol on Palm আধ্যাত্মিক শক্তির ইঙ্গিত P Palm Shape চার প্রকার – Earth, Air, Fire, Water Palm Q Quadrangle (রেখার ম...