সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু: জীবনী ও আত্মজীবনী

 নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু: জীবনী ও আত্মজীবনী

 নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু



নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু ছিলেন ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের এক মহানায়ক, যার জীবন ও আদর্শ আজও মানুষের জন্য এক অমোঘ প্রেরণা। তাঁর আত্মজীবনী এবং জীবনের প্রধান ঘটনাগুলি বাংলায় তুলে ধরা হলো:


প্রাথমিক জীবন

  • জন্ম: ২৩ জানুয়ারি, ১৮৯৭, কটক, ওড়িশা।
  • পিতামাতা: জানকীনাথ বসু (আইনজীবী) এবং প্রভাবতী দেবী।
  • শিক্ষা: র‍্যাভেনশ কলেজিয়েট স্কুল থেকে পড়াশোনা করেন এবং পরে কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজ ও স্কটিশ চার্চ কলেজ থেকে স্নাতক হন। উচ্চশিক্ষার জন্য ইংল্যান্ডের ফিটজউইলিয়াম কলেজ, কেমব্রিজে যান এবং সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় সফলতা অর্জন করেন।

স্বাধীনতা সংগ্রামে প্রবেশ

সুভাষচন্দ্র বসু আইসিএস (ইন্ডিয়ান সিভিল সার্ভিস) পরীক্ষায় চতুর্থ স্থান অর্জন করলেও, ১৯২১ সালে মহাত্মা গান্ধীর নেতৃত্বে ব্রিটিশ সরকারের বিরুদ্ধে অসহযোগ আন্দোলনের প্রেরণায় চাকরি ত্যাগ করেন। এরপর তিনি ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসে যোগ দিয়ে দ্রুত একজন দৃঢ় নেতা হয়ে ওঠেন।


মতাদর্শগত বিভেদ

সুভাষচন্দ্র বসুর পূর্ণ স্বরাজ বা সম্পূর্ণ স্বাধীনতার লক্ষ্য কংগ্রেসের অন্যান্য নেতাদের তুলনায় অনেক বেশি দৃঢ় ছিল। মহাত্মা গান্ধীর অহিংস নীতির সঙ্গে তাঁর মতের প্রায়ই বিরোধ হতো। তিনি মনে করতেন, ব্রিটিশ শাসনকে পরাস্ত করার জন্য শক্তিশালী ও সশস্ত্র আন্দোলন প্রয়োজন।


রাজনৈতিক নেতৃত্ব

  • ১৯৩৮ ও ১৯৩৯ সালে তিনি কংগ্রেস সভাপতি নির্বাচিত হন।
  • কংগ্রেসের মধ্যবর্তী মতভেদের কারণে ১৯৩৯ সালে তিনি কংগ্রেস থেকে পদত্যাগ করেন এবং ফরওয়ার্ড ব্লক গঠন করেন।

আজাদ হিন্দ বাহিনীর প্রতিষ্ঠা 

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন নেতাজি আন্তর্জাতিক সাহায্যের জন্য জার্মানি ও জাপানের কাছে যান।

  • ১৯৪১ সালে ব্রিটিশদের নজরদারি এড়িয়ে আফগানিস্তান ও সোভিয়েত ইউনিয়ন হয়ে জার্মানিতে পৌঁছান।
  • জার্মানিতে অ্যাডলফ হিটলারের সঙ্গে দেখা করেন এবং পরবর্তীতে জাপানে গিয়ে ভারতীয় জাতীয় সেনাবাহিনী (আজাদ হিন্দ ফৌজ) গঠন করেন।
  • "তোমরা আমাকে রক্ত দাও, আমি তোমাদের স্বাধীনতা দেবো"—এই স্লোগানটি অমর হয়ে রয়েছে।

আজাদ হিন্দ সরকার

১৯৪৩ সালে নেতাজি সিঙ্গাপুরে আজাদ হিন্দ সরকার গঠন করেন এবং ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন। আজাদ হিন্দ ফৌজ বার্মা (মায়ানমার) এবং ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে লড়াই চালিয়েছিল, যদিও সামরিক পরাজয়ের কারণে এই আন্দোলন সফল হয়নি।


রহস্যময় মৃত্যু

নেতাজির মৃত্যু নিয়ে আজও বিতর্ক রয়েছে। আনুষ্ঠানিকভাবে বলা হয় যে তিনি ১৮ আগস্ট, ১৯৪৫ সালে তাইওয়ানে এক বিমান দুর্ঘটনায় মারা যান। তবে অনেকের বিশ্বাস, তিনি বেঁচে ছিলেন এবং অন্য কোনো পরিচয়ে জীবন কাটিয়েছিলেন।


নেতাজির আত্মজীবনী

তাঁর আত্মজীবনী "দি ইন্ডিয়ান স্ট্রাগল (১৯২০-১৯৪২)" তাঁর চিন্তাভাবনা, দৃষ্টিভঙ্গি এবং ভারতের স্বাধীনতার জন্য তাঁর পরিকল্পনার একটি উজ্জ্বল প্রতিফলন। ইউরোপে নির্বাসিত অবস্থায় লেখা এই বইতে তিনি স্বাধীনতা সংগ্রামের বিশদ বিবরণ তুলে ধরেছেন। ব্রিটিশ সরকার বইটি নিষিদ্ধ করেছিল এর বিপ্লবী বিষয়বস্তুর কারণে।


উত্তরাধিকার

  • নেতাজি নামে জনপ্রিয়, যার অর্থ "সম্মানিত নেতা।"
  • তাঁর দেশপ্রেম, সাহস এবং আত্মত্যাগ ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।

নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু আজও এক যুগপুরুষ, যিনি ভারতের হৃদয়ে চিরস্থায়ী।


Netaji Subhas Chandra Bose, a towering figure in India's struggle for independence, was a charismatic leader whose life and legacy continue to inspire generations. Below is an overview of his autobiography and notable life events:

Early Life

  • Born: January 23, 1897, in Cuttack, Odisha, British India.
  • Parents: Janakinath Bose (a lawyer) and Prabhavati Devi.
  • Education: Attended Ravenshaw Collegiate School and later graduated from Presidency College and Scottish Church College in Kolkata. He pursued higher studies in England at Fitzwilliam College, Cambridge, preparing for the Indian Civil Service (ICS) examination.

Entry into Freedom Struggle

Subhas Chandra Bose ranked fourth in the ICS exam but resigned in 1921, inspired by Mahatma Gandhi's call for non-cooperation with the British government. Bose joined the Indian National Congress (INC) and became a prominent leader known for his radical views on achieving independence.

Ideological Differences

Bose's vision for complete and immediate independence often clashed with the more moderate approach of the Congress leaders, including Gandhi. He believed in a more assertive and militant approach to overthrow British rule.

Political Leadership

  • Elected President of the Indian National Congress twice (1938, 1939).
  • Formed the Forward Bloc in 1939 after resigning from the Congress due to ideological differences.

Formation of the Indian National Army (INA)

During World War II, Bose sought international support for India's independence.

  • Escaped British surveillance in 1941 and traveled to Germany via Afghanistan and the Soviet Union.
  • Met Adolf Hitler but found limited support in Europe.
  • Later went to Japan and formed the Indian National Army (Azad Hind Fauj) with the help of Indian prisoners of war and expatriates in Southeast Asia.

The INA's slogan, "Give me blood, and I will give you freedom," became iconic.

The Azad Hind Government

Bose established the Provisional Government of Free India in Singapore in 1943 and declared war against the British Empire with Japanese assistance. He led INA forces in campaigns in Burma (Myanmar) and northeastern India, although the movement faced setbacks due to military defeats.

Mysterious Death

Netaji's death remains a subject of speculation and controversy. Officially, it is said that he died in a plane crash on August 18, 1945, in Taiwan, but many believe he survived and lived incognito.

Legacy

  • Revered as Netaji, meaning "Respected Leader."
  • Remembered for his patriotism, bravery, and unyielding spirit.
  • Key inspiration behind the eventual freedom movement's momentum that led to India's independence in 1947.

His autobiography, "The Indian Struggle (1920-1942)," offers insight into his thoughts, philosophy, and vision for an independent India. Written during his exile in Europe, the book provides a detailed account of the Indian freedom movement and highlights his strategies for liberating the nation. The British government banned it during colonial rule due to its revolutionary content.



মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

🦁 সিংহ ও ইঁদুর 🐭 ঠাকুরমার ঝুলি থেকে নীতিশিক্ষামূলক গল্প

  🦁 সিংহ ও ইঁদুর 🐭 ঠাকুরমার ঝুলি থেকে নীতিশিক্ষামূলক গল্প   একদা এক গভীর জঙ্গলে এক বিশাল সিংহ বাস করত। সে ছিল বনের রাজা, সমস্ত প্রাণী তার ভয়ে কাঁপত। একদিন দুপুরবেলা রাজা সিংহ খেয়ে দেয়ে এক গাছের ছায়ায় ঘুমিয়ে পড়ল। এমন সময়, এক ছোট্ট ইঁদুর তার গর্ত থেকে বেরিয়ে এদিক-ওদিক দৌড়াদৌড়ি করছিল। খেলার ছলেই সে ভুলবশত সিংহের গায়ের উপর চড়ে গেল। এতে সিংহের ঘুম ভেঙে গেল। 😡 ⚡ গর্জন করে সে ইঁদুরটিকে ধরে ফেলল এবং রাগান্বিত স্বরে বলল, 👉 "দুষ্ট ইঁদুর! তুমি এত সাহসী হলে যে আমায় বিরক্ত করছ? এখন আমি তোমাকে খেয়ে ফেলব!" ইঁদুরটি ভয়ে কাঁপতে লাগল এবং হাতজোড় করে বলল, 🙏 "মহারাজ, দয়া করুন! আমি খুবই ছোট্ট আর অসহায়। দয়া করে আমাকে মুক্ত করুন। আমি একদিন আপনার উপকারে আসব!" সিংহ হেসে বলল, 😆 "তুমি এত ছোট একটা প্রাণী! তুমি আবার কীভাবে আমার উপকার করবে?" তবুও, সিংহ দয়ালু হয়ে ইঁদুরটিকে মুক্ত করে দিল । ইঁদুর আনন্দে লাফিয়ে গিয়ে বলল, 🐭 "আপনার এই দয়ার প্রতিদান আমি একদিন দেব, মহারাজ!" ⏳ কিছুদিন পর... সিংহ একদিন বনের মধ্যে শিকারের সন্ধানে ঘুরছিল। হঠাৎ সে এক শিকার...

"বাঘ এসেছিল!|শিশুদের জন্য একটি রহস্যময় বাংলা গল্পIThere Comes the Tiger...

✋ হাতের রেখা বিচার A থেকে Z (Palmistry in Bengali)

    ✋ হাতের রেখা বিচার A থেকে Z (Palmistry in Bengali) 🔠 A থেকে Z বিষয়ভিত্তিক তালিকা: অক্ষর বিষয় বাংলা ব্যাখ্যা A Arjuna Line বিজয়ের রেখা, সাফল্যের প্রতীক B Bracelet Lines কব্জির দাগ, আয়ু ও ভাগ্যের সংকেত C Cross on Palm হাতের ক্রস চিহ্ন – বাধা বা আশীর্বাদ D Destiny Line (ভাগ্যরেখা) কর্মজীবন ও ভাগ্যের দিক নির্ধারণ E Education Line শিক্ষাগত সাফল্যের রেখা F Fate Line কর্মজীবনের উত্থানপতনের রেখা G Girdle of Venus অতিরিক্ত আবেগ বা শিল্পপ্রতিভার চিহ্ন H Heart Line (হৃদয়রেখা) ভালোবাসা ও সম্পর্কের সূচক I Island Sign জীবনে বাধা বা কষ্টের প্রতীক J Jupiter Mount নেতৃত্ব, সম্মান ও উচ্চাকাঙ্ক্ষা K Ketu Line আধ্যাত্মিকতা ও বিচ্ছিন্নতার রেখা L Life Line (জীবনরেখা) শরীর, স্বাস্থ্য ও আয়ুর ইঙ্গিত M Mystic Cross আধ্যাত্মিক প্রতিভার চিহ্ন N Nail Shape স্বাস্থ্য ও ব্যক্তিত্ব প্রকাশ করে O Om Symbol on Palm আধ্যাত্মিক শক্তির ইঙ্গিত P Palm Shape চার প্রকার – Earth, Air, Fire, Water Palm Q Quadrangle (রেখার ম...