চারজন ব্রাহ্মণের গল্প বিক্রম-বেতাল সংকলনের একটি জনপ্রিয় কাহিনি, যা নৈতিক শিক্ষা এবং বুদ্ধিমত্তার গুরুত্ব তুলে ধরে।
গল্পের সারাংশ:
চারজন ব্রাহ্মণ বন্ধু ছিলেন, যারা একসঙ্গে পড়াশোনা করতেন। তাদের মধ্যে তিনজন খুবই জ্ঞানী ও শাস্ত্রজ্ঞ ছিলেন, কিন্তু বাস্তবজ্ঞান বা সাধারণ বুদ্ধি তেমন ছিল না। অন্যদিকে, চতুর্থজনের বিদ্যা কম ছিল, কিন্তু তার সাধারণ বুদ্ধি এবং জীবনবোধ ছিল অত্যন্ত প্রখর।
প্রথম ব্রাহ্মণ তার জাদুবিদ্যা ব্যবহার করে কঙ্কালের উপর মাংস ও চামড়া তৈরি করল।
দ্বিতীয় ব্রাহ্মণ সেই দেহে রক্তসঞ্চালন করল এবং তা জীবন্ত দেহের মতো করে তুলল।
তৃতীয় ব্রাহ্মণ সিংহটিকে প্রাণ সঞ্চার করার জন্য প্রস্তুতি নিল।
চতুর্থ ব্রাহ্মণ যখন দেখল যে তার বন্ধুরা এক ভয়ংকর সিংহকে জীবিত করতে চলেছে, সে তাদের সাবধান করল। সে বলল, "তোমরা যা করতে যাচ্ছ, তা বিপজ্জনক। একটি জীবন্ত সিংহ আমাদের সবার জন্যই প্রাণঘাতী হতে পারে।"
তবে বাকি তিনজন তার কথা শুনল না। তখন চতুর্থ ব্রাহ্মণ নিজের জীবন বাঁচানোর জন্য একটি গাছে উঠে বসল।
যেইমাত্র তৃতীয় ব্রাহ্মণ সিংহটিকে প্রাণ দিল, সিংহটি জীবিত হয়ে উঠল এবং সঙ্গে সঙ্গেই তাদের আক্রমণ করে হত্যা করল। গাছে থাকা চতুর্থ ব্রাহ্মণ এই মর্মান্তিক দৃশ্য দেখল, কিন্তু তার বুদ্ধিমত্তার জন্য সে নিজেকে রক্ষা করতে সক্ষম হল।
নৈতিক শিক্ষা:
১. জ্ঞান যতই বেশি হোক না কেন, তা যদি সাধারণ বুদ্ধি এবং বাস্তবজ্ঞান ছাড়া ব্যবহার করা হয়, তবে তা বিপদ ডেকে আনতে পারে।
২. অহংকার ও আত্মবিশ্বাস অতিরিক্ত হলে তা ধ্বংসের কারণ হতে পারে।
৩. জীবনের বাস্তব পরিস্থিতিতে বুদ্ধিমত্তা ও সতর্কতা সবচেয়ে বড় গুণ।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন