শুভর জাদু প্রদীপ
একটি ছোট্ট গ্রাম, সবুজে ঘেরা শান্ত পরিবেশ। সেই গ্রামে থাকত এক শিশু, যার নাম শুভ। সে ছিল হাসিখুশি, দয়ালু ও সবার মঙ্গল কামনা করত।
একদিন শুভ গ্রামের পথে হাঁটছিল। হঠাৎ করে আকাশ ঘন কালো মেঘে ঢেকে গেল, প্রবল বৃষ্টি শুরু হলো। ভিজে যাওয়ার হাত থেকে বাঁচতে সে দৌড়ে গিয়ে একটি পুরনো মন্দিরে আশ্রয় নিল। মন্দিরের ভেতর ঢুকে সে দেখল, এক কোণে একটা পুরনো প্রদীপ পড়ে আছে। কৌতূহলবশত শুভ সেটি হাতে তুলে নিল এবং বাইরে এসে পরিষ্কার করল।
ঠিক তখনই একজন ঋষি তার সামনে উপস্থিত হলেন। ঋষি শুভর দিকে তাকিয়ে মৃদু হাসলেন এবং বললেন,
— "এই প্রদীপটি খুবই বিশেষ। যদি তুমি এর কাছে কোনো মঙ্গল কামনা করো, তবে সেটি সত্যি হবে।"
শুভ বিস্ময়ে ঋষির কথা শুনল। তিনি শুভকে বললেন,
— "তুমি ইচ্ছে করলে নিজের জন্য কিছু চাইতে পারো।"
কিন্তু শুভ কিছুক্ষণ চিন্তা করল এবং বলল,
— "আমি চাই, আমাদের গ্রামে সকলে মিলেমিশে ভালোবাসার সাথে একসাথে বসবাস করুক।"
ঋষি মুগ্ধ হলেন শুভর এই নিঃস্বার্থ কামনা শুনে। আশীর্বাদ দিয়ে তিনি অদৃশ্য হলেন। শুভও আনন্দের সাথে বাড়ি ফিরে এল।
রাতের বেলা সে নিজের ঘরের কোণে বসে প্রদীপটি নিয়ে ভাবতে লাগল, "কাল কী হবে?" সেই চিন্তার মাঝেই সে ঘুমিয়ে পড়ল।
পরদিন সকালে শুভ নদীর ধারে হাঁটতে গিয়ে অবাক হয়ে দেখল, গ্রামে সবাই একসাথে বসে হাসিমুখে গল্প করছে, কেউ কারও সাথে ঝগড়া করছে না, কেউ কাউকে কষ্ট দিচ্ছে না। এমন সুন্দর দৃশ্য দেখে শুভর মন আনন্দে ভরে গেল। সে বুঝতে পারল, তার ইচ্ছা সত্যি হয়েছে।
বছর কেটে গেল, শুভ বড় হলো। একদিন তার স্ত্রীকে ছোটবেলার এই ঘটনার কথা বলল। সে বলল,
— "জানো, সেই প্রদীপটা হয়তো জাদুর ছিল না, কিন্তু আমার অন্তরের শুদ্ধ কামনাই আমাদের গ্রামকে সুখী করেছে।"
তার স্ত্রী হাসলেন এবং বললেন,
— "যে অন্যের মঙ্গল চায়, তার জীবনও আনন্দে ভরে ওঠে।"
নৈতিক শিক্ষা:
যে অন্যের ভালো চায়, ঈশ্বরও তার ভালো করেন।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন