হ , উনি দুপুর বেলায় প্রসাদ পাওনের আশায় আইছিলেন , সবাই মিলে ওনারে মাইরা তাড়াইয়া দিছেন । : - - শ্রীশ্রী রামঠাকুর *জয় গুরু < > জয় রাম < > জয় গোবিন্দ* *~~ শুভ সন্ধ্যা ~~* সাধারণতঃ শ্রীশ্রী রামঠাকুরের আদেশ ছিল বারটার মধ্যে প্রাত্যহিক ভোগ দেওয়া ; কিন্তু উৎসব উপলক্ষে ভক্তদের প্রসাদ পাওয়া শেষ না হওয়া পর্য্যন্ত তিনি নিজে কিছু গ্রহণ করতেন না । সেদিন আবহাওয়া কিছু কিছু বিঘ্ন ঘটিয়ে ছিল । ঝড় হওয়ার সঙ্গে মাঝে মাঝে বৃষ্টিতে শীত একটু বেশী অনুভূত হচ্ছিল । তবুও উৎসব আনন্দে ভাঁটা পড়েনি । মহানন্দে প্রসাদ গ্রহনান্তে সকলেই গৃহে ফিরে গেলেন । উৎসব বাড়ির লোকজন সকলেই বিশ্রামে রত । রাস্তাও দুর্য্যোগে জনশূন্য হয়েছিল । শ্রীঠাকুর কিন্তু তখনও ভোগ গ্রহণ করেন নাই । আর শ্রীঠাকুরের ভোগ তো সামান্য একটু সরবত মৌরী ভিজানো জল মিশ্রি সহযোগে তৈরী । নিত্য সহচর সদানন্দবাবু সেইটুকু এনে শ্রী ঠাকুরকে গ্রহণ করতে অনুরোধ করলেন । শ্রীঠাকুর বললেন , এখন না ,পরে দিবেন । সদানন্দবাবু বুঝলেন , এখনও কেউ প্রসাদ পাননি । খোঁজ নিলেন কিছুক্ষন পর্য্যন্ত কিন্তু কাউকে দেখতে না পেয়ে ঠাকুরকে আবার সরবত গ্রহণ করতে অনুরোধ করলে শ্রীঠাকুর বললেন , যাইয়া দেইখ্যা আসেন প্রসাদ পাইতে কেহ বাকি আছে কিনা । বৃষ্টিবিঘ্নিত শীতকালের অপরাহ্নে সন্ধ্যার অন্ধকার নেমে এসেছে । সদানন্দবাবু কিছুক্ষন দাঁড়িয়ে চতুর্দ্দিকে নিরীক্ষণ করলেন , কারুর আসার সম্ভাবনা নেই । সদানন্দবাবু ফিরে গিয়ে আবার শ্রীঠাকুরকে বলতেই ঠাকুর বললেন , আপনার দেখনের ইচ্ছা নাই , তাই কইতেছেন কেউ নাই । অগত্যা সদানন্দবাবু পথে বেরুলেন । ঠাণ্ডা হওয়া , বৃষ্টিতে জনমানব শূন্য পিছল রাস্তা , আশেপাশের সমস্ত গৃহের দরজা , জানালা বন্ধ । সদানন্দবাবু ফিরে এসে সব জানিয়ে আবার ভোগ গ্রহণের অনুরোধ করলেন । শ্রীঠাকুর এবারও বললেন , জলকাদায় আপনার দেখনের ইচ্ছা নাই । তার পর ঠাকুর গম্ভীর হয়ে বললেন , আমার কিছু দরকার নাই । প্রত্যাখ্যাত সদানন্দবাবু বিষণ্ন মনে চলছেন প্রায় অন্ধকার রাস্তা দিয়ে প্রসাদ গ্রহণে অবশিষ্ট ভক্তের সন্ধানে । তার প্রসাদ গ্রহণ না হলে যে শ্রীঠাকুরও থাকবেন অভুক্ত । হঠাৎ দেখলেন এক গৃহস্থ বাড়ি , সেখানে দেখলেন একটি শীর্ণকায় কুকুর সকরুণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে দ্রুতগতিতে লেজ নাড়ছে । সদানন্দবাবুকে দেখে কুকুরটি সম্মুখে রাখা খড়ের গাদা থেকে বেরিয়ে এল । তার করুন দৃষ্টি সদানন্দবাবুর প্রাণে দয়ার সঞ্চার করল । এই দুর্য্যোগে সে অভুক্ত , তাই সামান্যমাত্র আহ্বানেই সদানন্দবাবুকে অনুসরণ করে চলে এল উৎসব বাড়ির প্রাঙ্গনে । সদানন্দবাবু পরিষ্কার জায়গায় কলাপাতাতে খিচুড়ি প্রসাদ তারকারীসহ দিতেই সে লেজ নাড়তে নাড়তে খেতে লাগল । দ্বিতীয় বারও প্রসাদ গ্রহণ করে উদরপূর্ত্তিতে তৃপ্ত ধীরে ধীরে রাস্তায় নেমে চলে গেল । পরিতৃপ্ত নয়নে সদানন্দবাবু তার গমন পথে চেয়ে রইলেন । অপেক্ষা করলেন আরও কিছুক্ষণ যদি আর কোনও প্রসাদ প্রার্থী আসেন । কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে শ্রী ঠাকুরকে জানালেন , আর কেউ প্রসাদ পাওয়ার আছেন বলে মনে হচ্ছে না । প্রশান্ত দৃষ্টিতে শ্রীঠাকুর সদানন্দবাবুকে বললেন , " হ , উনি দুপুর বেলায় প্রসাদ পাওনের আশায় আইছিলেন , সবাই মিলে ওনারে মাইরা তারাইয়া দিছেন । মাইরের ভয়ে উনি আসতে আর সাহস পান নাই মনের দুঃখে চইলা গেছেন । অভিমান কইরা সারাদিন কিছু খানও নাই "। শ্রীঠাকুর এইবার প্রসন্ন কন্ঠে বললেন , দেন , এইবার আমারে প্রসাদ দেন । আপনারও তো প্রসাদ পাওয়া হয় নাই । এখন আপনেও প্রসাদ পান গিয়া । ভক্তগণ লক্ষ্য করুন , শ্রীঠাকুরের তথাকথিত ঐ ইতর প্রাণীকেও সম্মানিত সম্বোধন " আপনি " তে ভূষিত করা । " সর্বভূতে সেই প্রেমময় , ছাড়ি কোথা খুঁজিছ ঈশ্বর ? জীবে প্রেম করে যেইজন , সেই জন সেবিছে ঈশ্বর " । শ্রীমতী প্রমীলা দত্ত , " পুনশ্চ " পৃষ্ঠা সংখ্যা ১১১। হইতে ।
🦁 সিংহ ও ইঁদুর 🐭 ঠাকুরমার ঝুলি থেকে নীতিশিক্ষামূলক গল্প একদা এক গভীর জঙ্গলে এক বিশাল সিংহ বাস করত। সে ছিল বনের রাজা, সমস্ত প্রাণী তার ভয়ে কাঁপত। একদিন দুপুরবেলা রাজা সিংহ খেয়ে দেয়ে এক গাছের ছায়ায় ঘুমিয়ে পড়ল। এমন সময়, এক ছোট্ট ইঁদুর তার গর্ত থেকে বেরিয়ে এদিক-ওদিক দৌড়াদৌড়ি করছিল। খেলার ছলেই সে ভুলবশত সিংহের গায়ের উপর চড়ে গেল। এতে সিংহের ঘুম ভেঙে গেল। 😡 ⚡ গর্জন করে সে ইঁদুরটিকে ধরে ফেলল এবং রাগান্বিত স্বরে বলল, 👉 "দুষ্ট ইঁদুর! তুমি এত সাহসী হলে যে আমায় বিরক্ত করছ? এখন আমি তোমাকে খেয়ে ফেলব!" ইঁদুরটি ভয়ে কাঁপতে লাগল এবং হাতজোড় করে বলল, 🙏 "মহারাজ, দয়া করুন! আমি খুবই ছোট্ট আর অসহায়। দয়া করে আমাকে মুক্ত করুন। আমি একদিন আপনার উপকারে আসব!" সিংহ হেসে বলল, 😆 "তুমি এত ছোট একটা প্রাণী! তুমি আবার কীভাবে আমার উপকার করবে?" তবুও, সিংহ দয়ালু হয়ে ইঁদুরটিকে মুক্ত করে দিল । ইঁদুর আনন্দে লাফিয়ে গিয়ে বলল, 🐭 "আপনার এই দয়ার প্রতিদান আমি একদিন দেব, মহারাজ!" ⏳ কিছুদিন পর... সিংহ একদিন বনের মধ্যে শিকারের সন্ধানে ঘুরছিল। হঠাৎ সে এক শিকার...
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন