সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

শ্রীশ্রী রাম ঠাকুরের লীলা মাধুরী

 

শ্রীশ্রী রাম ঠাকুরের লীলা মাধুরী
--------------
🌹👏💥👏🌹
রথের সময় ঠাকুর রাম নিবাসে অবস্থান করছেন ।
আজ উল্টোরথ।
হঠাৎ ঠাকুরের খেয়াল হল আজ গাছ কিনতে হয়।
তাই তিনি ডা:দাশগুপ্তকে বললেন ডাক্তারবাবু গাছ কিনতে যাবেন না ?
শুনে ডা: দাশগুপ্ত সঙ্গে সঙ্গে প্রস্তুত হয়ে ডাকলেন ড্রাইভারকে।
কে কে যাচ্ছেন?
পেছনের সিটে ঠাকুর ও দাশগুপ্তের স্ত্রী মানসনলিনীদেবী
আর সামনের দিকে রয়েছেন ডাক্তারবাবু ও ড্রাইভার।
গাড়ী চলল আপন গতিতে।
মৌলালী অতিক্রম করল। আকাশ মেঘাচ্ছন্ন। মাঝে মাঝে বিদ্যুতের চাবুকে আলোকিত হয়ে উঠেছে চারিদিক। মেঘ-মেদুর আকাশ থেকে ঝরছে অঝোরে বারিধারা।
সহসা প্রচণ্ড একটা শব্দ হল। চমকে উঠলেন সবাই।
বিকট গর্জনে ট্রামের তারে হল বজ্রপতন। ছিঁড়ে গেল তার।
গাড়ীখানাকে ঘিরে ফেলল চতুর্দিক থেকে লোকজন।
অদূরে ভয়ে লোক থরথর করে তখন কাঁপছে। তাদের নিশ্চিত ধারনা, গাড়ীর লোকগুলো এবারে মারা পড়বে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে। হায় হায়!
লোকে লোকারণ্য চতুর্দিক। চারটি মানুষের অসহায় মৃত্যুকে প্রত্যক্ষ করতে আতঙ্কিত অন্তরে দাড়িয়ে!
কে এগিয়ে গিয়ে এই বিদ্যুৎ বেষ্টনী থেকে মুক্ত করবে তাদের?
ঠিক এমনি একটি চরম মূহুর্তে ছুটে এল সুঠাম সুন্দর কালো রং-এর একটি ছয় সাত বছরের বালক। মাথায় ঝাকরা চুল টিকালো নাক।
আকর্ণ বিস্তৃত নয়ন। সবাই তাকিয়ে রইল অপলক।
বালক দ্রুতগতিতে ছিন্ন তারের একটি অংশ ধরে গাড়ীর চারিদিকে ঘুরে এলো।
গাড়ীখানা মুক্ত হল বিদ্যুৎ বেষ্টনী থেকে।
তার ছুঁড়ে ফেলে দিল দূরে।
ছুটে এল বালক গাড়ীতে উপবিষ্ট ডা: দাশগুপ্তের কাছে।
ছোট একটি চারা গাছ দেখিয়ে বলল এই গাছটা নিবেন।
দাশগুপ্ত পরম আগ্রহে গ্রহণ করলেন গাছটি।
বালকটি মিলিয়ে গেল জনারণ্যের মাঝে।
এতক্ষণ ঠাকুর বসে ছিলেন তণ্ময় হয়ে।
সহসা বললেন গাছ তো পেয়েছেন। এখন বাড়ী চলেন।
আবার ঠাকুরের তণ্ময় ভাব নিজের মধ্যে নিজে আত্মলীন।
নীরব নীথর পাষাণ মূর্তির মত স্তব্ধ সমাহিত।
গাড়ী ছুটে চলেছে বেগে।
এ যেন নবজন্ম লাভ ।
ঠাকুর কথা বললেন এতক্ষণে, এই ছেলেটি কে একে চিনতে পেরেছেন?
ডাক্তারবাবু বললেন, না বাবা, জানিনা।
ঠাকুর বললেন, এই বালকটি বিপদ-তারণ শ্রীমধুসূদন।
একটু থেমে ঠাকুর প্রশ্ন করলেন,
গাছটি আপনাকে কে দিলেন?
ঠাকুর তার সুললীত কণ্ঠে বললেন এই তো আপনার গোপাল।
এই গোপাল বড় হলেই তার নাম হয় গোবিন্দ।
নাম আর নামী যে অভেদ তারই প্রত্যক্ষ প্রমাণ রাখলেন ঠাকুর তার প্রিয় ভক্তের সমক্ষে।
ডাক্তারবাবুকে যে নাম দিয়েছিলেন সে মন্ত্রটি
ছিল "গোপাল গোবিন্দ রাম শ্রীমদুসূদন। "
গোপালের ব্যাখ্যা করলেন।
করলেন গোবিন্দের ব্যাখ্যা।
শ্রী রাম চন্দ্র স্বয়ং তার সম্মুখে উপবিষ্ট।
তিনে মিলে একাধারে হলেন গোপাল গোবিন্দরাম শ্রীমধুসূদন।
দিব্যাধারে ঠাকুর দিলেন দিব্যজ্ঞান।
করালেন দর্শন।
প্রচ্ছন্ন ঠাকুরের সবই প্রচ্ছন্ন।
অন্তরালের বাঁশরী।
যখন ঘটানাটি ঘটল তখন ঠাকুর নীরব, নিস্পন্দ।
ছোট শিশু চারা গাছটি ছিলো কেলিকদম্ব।
ঠাকুর বললেন গাছটি
পুষ্পোদ্যানে রোপন করতে । কারন, গোবিন্দের মন্দিরে ইনি সুবাস বিতরণ করে তৃপ্তি সাধন করবেন আর গোবিন্দ স্বয়ং এই বৃক্ষছায়ায় বিশ্রাম করবেন।
গাছটি বড় হলে ঠাকুর এই কেলিকদম্বের শীতল প্রচ্ছায়ে পরম তৃপ্তিভরে শুয়ে থাকতেন আরাম কেদারায়।
শ্রীরাম নিবাসে প্রবেশ করলেই দেখা যায় এ গাছটি।
আজও সে গোবিন্দের মন্দিরে সুবাস বিতরণ করে আকাশস্পর্শী হয়ে দাড়িয়ে আছে।
এখানে আজও তার লীলা চলছে।
ভাগ্যবান তা দেখে ধন্য হন।
ঠাকুর তাই একসময়
বলেছিলেন "শ্রীরাম নিবাসে একটি পোকা মাকড় মরলেও কৈবল্যপ্রাপ্ত হইবে।
💥♨️
জয়রাম জয়রাম জয়রাম


মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

🦁 সিংহ ও ইঁদুর 🐭 ঠাকুরমার ঝুলি থেকে নীতিশিক্ষামূলক গল্প

  🦁 সিংহ ও ইঁদুর 🐭 ঠাকুরমার ঝুলি থেকে নীতিশিক্ষামূলক গল্প   একদা এক গভীর জঙ্গলে এক বিশাল সিংহ বাস করত। সে ছিল বনের রাজা, সমস্ত প্রাণী তার ভয়ে কাঁপত। একদিন দুপুরবেলা রাজা সিংহ খেয়ে দেয়ে এক গাছের ছায়ায় ঘুমিয়ে পড়ল। এমন সময়, এক ছোট্ট ইঁদুর তার গর্ত থেকে বেরিয়ে এদিক-ওদিক দৌড়াদৌড়ি করছিল। খেলার ছলেই সে ভুলবশত সিংহের গায়ের উপর চড়ে গেল। এতে সিংহের ঘুম ভেঙে গেল। 😡 ⚡ গর্জন করে সে ইঁদুরটিকে ধরে ফেলল এবং রাগান্বিত স্বরে বলল, 👉 "দুষ্ট ইঁদুর! তুমি এত সাহসী হলে যে আমায় বিরক্ত করছ? এখন আমি তোমাকে খেয়ে ফেলব!" ইঁদুরটি ভয়ে কাঁপতে লাগল এবং হাতজোড় করে বলল, 🙏 "মহারাজ, দয়া করুন! আমি খুবই ছোট্ট আর অসহায়। দয়া করে আমাকে মুক্ত করুন। আমি একদিন আপনার উপকারে আসব!" সিংহ হেসে বলল, 😆 "তুমি এত ছোট একটা প্রাণী! তুমি আবার কীভাবে আমার উপকার করবে?" তবুও, সিংহ দয়ালু হয়ে ইঁদুরটিকে মুক্ত করে দিল । ইঁদুর আনন্দে লাফিয়ে গিয়ে বলল, 🐭 "আপনার এই দয়ার প্রতিদান আমি একদিন দেব, মহারাজ!" ⏳ কিছুদিন পর... সিংহ একদিন বনের মধ্যে শিকারের সন্ধানে ঘুরছিল। হঠাৎ সে এক শিকার...

"বাঘ এসেছিল!|শিশুদের জন্য একটি রহস্যময় বাংলা গল্পIThere Comes the Tiger...

✋ হাতের রেখা বিচার A থেকে Z (Palmistry in Bengali)

    ✋ হাতের রেখা বিচার A থেকে Z (Palmistry in Bengali) 🔠 A থেকে Z বিষয়ভিত্তিক তালিকা: অক্ষর বিষয় বাংলা ব্যাখ্যা A Arjuna Line বিজয়ের রেখা, সাফল্যের প্রতীক B Bracelet Lines কব্জির দাগ, আয়ু ও ভাগ্যের সংকেত C Cross on Palm হাতের ক্রস চিহ্ন – বাধা বা আশীর্বাদ D Destiny Line (ভাগ্যরেখা) কর্মজীবন ও ভাগ্যের দিক নির্ধারণ E Education Line শিক্ষাগত সাফল্যের রেখা F Fate Line কর্মজীবনের উত্থানপতনের রেখা G Girdle of Venus অতিরিক্ত আবেগ বা শিল্পপ্রতিভার চিহ্ন H Heart Line (হৃদয়রেখা) ভালোবাসা ও সম্পর্কের সূচক I Island Sign জীবনে বাধা বা কষ্টের প্রতীক J Jupiter Mount নেতৃত্ব, সম্মান ও উচ্চাকাঙ্ক্ষা K Ketu Line আধ্যাত্মিকতা ও বিচ্ছিন্নতার রেখা L Life Line (জীবনরেখা) শরীর, স্বাস্থ্য ও আয়ুর ইঙ্গিত M Mystic Cross আধ্যাত্মিক প্রতিভার চিহ্ন N Nail Shape স্বাস্থ্য ও ব্যক্তিত্ব প্রকাশ করে O Om Symbol on Palm আধ্যাত্মিক শক্তির ইঙ্গিত P Palm Shape চার প্রকার – Earth, Air, Fire, Water Palm Q Quadrangle (রেখার ম...